এসএসসি ২০২৬ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সিলেবাস

এসএসসি ২০২৬ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সিলেবাস: ডিজিটাল বিশ্বের প্রবেশদ্বার

এসএসসি পরীক্ষা ২০২৬ সালের পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগত মাইলফলক, আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়টি আধুনিক বিশ্বের সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) কর্তৃক প্রকাশিত পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুসারে, আইসিটি-তে ভালো ফলাফল অর্জন করতে হলে সিলেবাসের প্রতিটি অংশের উপর গভীর মনোযোগ দেওয়া আবশ্যক। এই ব্লগ পোস্টে আমরা এসএসসি ২০২৬ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সিলেবাস (বিষয় কোড: ১৫৪, পূর্ণ নম্বর: ৫০) বিস্তারিত সিলেবাস এবং প্রতিটি অংশের জন্য কার্যকর প্রস্তুতি কৌশল নিয়ে আলোচনা করব, যা তোমাদের পরীক্ষায় ভালো করতে সহায়তা করবে।


ক) কম্পিউটার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা: প্রযুক্তির মৌলিক ধারণা ও সুরক্ষা

এই অংশে তোমরা কম্পিউটার ও এর বিভিন্ন উপাদান, ডিজিটাল বিশ্বের বিভিন্ন দিক এবং সাইবার নিরাপত্তার প্রাথমিক ধারণা সম্পর্কে জানবে।

  • অধ্যায়-২: কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা: এই অধ্যায়ে কম্পিউটার ব্যবহারের সাধারণ নিরাপত্তা ঝুঁকি, যেমন – ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, হ্যাকিং, এবং ফিশিং সম্পর্কে জানতে পারবে। ব্যক্তিগত তথ্য ও ডিভাইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায়, পাসওয়ার্ড ব্যবহারের গুরুত্ব, অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের কাজ এবং কীভাবে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
    • প্রস্তুতি কৌশল: বিভিন্ন ধরণের ম্যালওয়্যার ও ভাইরাসের সংজ্ঞা এবং তাদের থেকে কম্পিউটার রক্ষার উপায়গুলো ভালো করে পড়বে। নিরাপদ পাসওয়ার্ড তৈরির নিয়ম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বজায় রাখার কৌশলগুলো বুঝে নেবে।

খ) অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ও ইন্টারনেট: দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার

এই অংশটি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারিক দিক, বিশেষ করে লেখালেখি, হিসাবরক্ষণ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করে।

  • অধ্যায়-৪: আমার লেখালেখি ও হিসাব: এই অধ্যায়ে তোমরা ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার (যেমন: মাইক্রোসফট ওয়ার্ড) এবং স্প্রেডশিট সফটওয়্যার (যেমন: মাইক্রোসফট এক্সেল) এর মৌলিক ব্যবহার সম্পর্কে শিখবে। ওয়ার্ড প্রসেসরে কীভাবে লেখা তৈরি, এডিট ও ফরম্যাট করতে হয় এবং স্প্রেডশিটে কীভাবে ডেটা এন্ট্রি, গণনা ও চার্ট তৈরি করতে হয়, তার ধারণা দেওয়া হবে। এটি ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
    • প্রস্তুতি কৌশল: ওয়ার্ড প্রসেসিং ও স্প্রেডশিট সফটওয়্যারের প্রধান ফিচারগুলো (যেমন: টেবিল তৈরি, ছবি যোগ করা, ফর্মুলা ব্যবহার, গ্রাফ তৈরি) হাতে-কলমে অনুশীলন করার চেষ্টা করবে। প্রতিটি টুলের কাজ ও ব্যবহার মনে রাখবে।
  • অধ্যায়-৫: ইন্টারনেট ও আমার জীবন: এই অধ্যায়ে ইন্টারনেটের উৎপত্তি, গুরুত্ব এবং এর বিভিন্ন সেব (যেমন: ই-মেইল, ওয়েব ব্রাউজিং, অনলাইন শপিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) সম্পর্কে জানতে পারবে। ইন্টারনেট কীভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করছে এবং এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
    • প্রস্তুতি কৌশল: ইন্টারনেটের প্রধান কাজগুলো, ই-মেইলের গুরুত্ব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব সম্পর্কে ভালোভাবে পড়বে। অনলাইন নিরাপত্তার বিষয়গুলো বারবার অনুশীলন করবে।
  • অধ্যায়-৬: আমার শিক্ষায় ইন্টারনেট: এই অধ্যায়ে ইন্টারনেট কীভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে, তা আলোচনা করা হয়েছে। অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম, ই-লার্নিং, ডিজিটাল কন্টেন্ট এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে গবেষণার সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারবে। এটি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষাকে উন্নত করার গুরুত্ব বোঝাতে সাহায্য করবে।
    • প্রস্তুতি কৌশল: অনলাইন শিক্ষার সুবিধা, ডিজিটাল কন্টেন্টের গুরুত্ব এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা রাখবে।

পরিশেষে কিছু কথা:

২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্কোরিং বিষয়। এটি তুলনামূলকভাবে কম অধ্যায়ের হওয়ায় ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে সহজেই ভালো নম্বর তোলা সম্ভব।

আইসিটি-তে ভালো করার জন্য কয়েকটি সাধারণ কৌশল নিচে দেওয়া হলো:

  1. পাঠ্যবই ভালোভাবে পড়া: প্রতিটি অধ্যায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়বে এবং মূল বিষয়গুলো চিহ্নিত করবে।
  2. ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন: যদি সম্ভব হয়, কম্পিউটারে বসে অধ্যায় ৪-এর বিষয়গুলো (ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশিট) হাতে-কলমে অনুশীলন করার চেষ্টা করবে।
  3. গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য: বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, সফটওয়্যার, ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, হ্যাকিং, ফিশিং ইত্যাদির সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য এবং উদাহরণগুলো মনে রাখবে।
  4. নৈতিক দিক ও সতর্কতা: ইন্টারনেট ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের নৈতিক দিক এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত সতর্কতাগুলো গুরুত্ব সহকারে পড়বে।
  5. নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্ন অনুশীলন: যেহেতু আইসিটি ৫০ নম্বরের একটি বিষয় এবং নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্ন বেশি থাকে, তাই প্রতিটি অধ্যায় থেকে বেশি বেশি নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্ন অনুশীলন করা জরুরি।
  6. বিগত বছরের প্রশ্নপত্র: বিগত বছরের এসএসসি পরীক্ষার আইসিটি প্রশ্নপত্র সমাধান করলে প্রশ্নের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাবে।

আইসিটি একটি ব্যবহারিক এবং ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। নিয়মিত অনুশীলন এবং আগ্রহের সাথে পড়লে তুমি অবশ্যই এই বিষয়ে ভালো করবে।

তোমার প্রস্তুতির জন্য অনেক শুভকামনা!

এসএসসি ২০২৬ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সিলেবাস – RS Academy BD