- +880 1722 729384
- info@rsacademybd.com
- Ansar Academy, Safipur, Gazipur 1751
Table of Contents
আমরা বাস করি পৃথিবীতে। “ভূগোল ও পরিবেশ” এখানে বাস করে নানান রকম প্রাণী, বিচিত্র তাদের জীবনধারা। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে রয়েছে নানান রকম পরিবেশ ও প্রকৃতি। এবং মানুষ ও মানুষের বিভিন্ন রকম সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। সুতরাং ভূগোল একদিকে পরিবেশ ও সমাজের বিজ্ঞান অন্যদিকে প্রকৃতির বিজ্ঞান।
বিষয় কোডঃ ১১০
অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০১
অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনামঃ ভূগোল ও পরিবেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিবেদন প্রণয়ন।
শিখনফল/বিষয়বস্তুঃ
নির্দেশনাঃ
ক) ভূগোলের ধারণা
খ) পরিবেশের ধারণা
গ) ভূগোলের পরিধি ও শাখা
ঘ) ভূগোল ও পরিবেশের উপাদানসমূহের আন্ত:সম্পর্ক
আমরা পৃথিবীতে বসবাস করি। পৃথিবীই আমাদের আবাসভূমি । আর এই পৃথিবীর বর্ণনা হলোই ভূগোল। ইংরেজি Geography শব্দটি থেকে ভূগোল শব্দ এসেছে। প্রাচীন গ্রিসের ভূগোলবিদ ও ভূগোলের জনক ইরাটসথেনিস ১ম Geography শব্দটি ব্যবহার করে। Geo ও graphy শব্দ দুটি মিলে হয়েছে Geography। অর্থাৎ Geo শব্দের অর্থ হলো ‘ভূ’ বা ‘পৃথিবী’ এবং graphy শব্দের অর্থ হলো বর্ণনা। সুতরাং Geography শব্দটির অর্থ পৃথিবীর বর্ণনা।
অধ্যাপক ম্যাকনি (Professor E. A. Macnee) মানুষের আবাসভূমি হিসেবে পৃথিবীর আলোচনা বা বর্ণনাকে বলেছেন ভূগোল। তার মতে, ভৌত ও সামাজিক পরিবেশে মানুষের কর্মকাণ্ড ও জীবনধারা নিয়ে যে বিষয় আলোচনা করে তাই ভূগোল। অধ্যাপক ডাডলি স্ট্যাম্পের (Professor L. Dudley Starnop) মতে, পৃথিবী ও এর অধিবাসীদের বর্ণনাই হলো ভূগোল। কোনো কোনো ভূগোলবিদ ভূগোলকে বলেছেন পৃথিবীর বিবরণ, আবার কেউ বলেছেন পৃথিবীর বিজ্ঞান। অধ্যাপক কার্ল রিটার (Professor Carl Ritter ) ভূগোলকে বলেছেন পৃথিবীর বিজ্ঞান। ভূগোল একদিকে প্রকৃতির বিজ্ঞান আর অন্যদিকে পরিবেশ ও সমাজের বিজ্ঞান। প্রকৃতি, পরিবেশ ও সমাজ সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান হলো ভূগোলের আলোচ্য বিষয়। রিচার্ড হার্টশোন (Richard artshorrie) বলেন, পৃথিবী পৃষ্ঠের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্যের যথাযথ যুক্তিসঙ্গত ও সুবিন্যস্ত বিবরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয় হলো ভূগোল।
আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির বিজ্ঞান একাডেমি ১৯৬৫ সালে ভূগোলের একটি সজ্ঞা দিয়েছেন। তাদের মতে, পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপব্যবস্থাগুলো কীভাবে সংগঠিত এবং এসব প্রাকৃতিক বিষয় বা অবয়বের সঙ্গে মানুষ নিজেকে কীভাবে বিন্যস্ত করে তার ব্যাখ্যা খোঁজে ভূগোল। আধুনিক ভূগোলের জনক আলেকজান্ডর বন হামবোল্টের (Alexander Von Humbolt) এর মতে, ভূগোল হলো প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত বিজ্ঞান, প্রকৃতিতে যা কিছু আছে তার বর্ণনা ও আলোচনার অন্তর্ভুক্ত।
মানুষ পৃথিবীতে বাস করে এবং এই পৃথিবীতেই তার জীবনযাত্রা নির্বাহ করে থাকে। পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ তার জীবনাত্রাকে প্রভাবিত করে থাকে। পৃথিবীর জীব, নদ-নদী, জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন উপাদান তার জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। তার ক্রিয়াকলাপ তার পরিবেশে ঘটায় বিভিন্ন রকম পরিবর্তন। মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে এই ক্রিয়া একটি সম্বন্ধ সৃষ্টি হয়। এই সম্বন্ধের মূলে আছে সম্পর্কের খেলা। ভূগোলের প্রধান কাজ হলো এই কার্যকারণ উদঘাটন করা। পৃথিবীর পরিবেশের সীমার মধ্যে থেকে মানুষের বেঁচে থাকার যে সংগ্রাম চলছে সে সম্পর্কে যুক্তিপূর্ণ আলোচনাই ভূগোল। পরিশেষে ভূগোলের গ্রহনযোগ্য সংজ্ঞা থেকেই বলা যায় যে, স্থান, কাল ও পরিবেশের প্রেক্ষিতে মানুষ ও তার কর্মকান্ডের তূলনামূলক বিশ্লেষণই হলো ভূগোল।
মানুষ সেখানেই বাস করুক না কেন তাকে ঘিরে একটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজমান। পৃকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। নদী, নালা, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়, পর্বত, বন, জঙ্গল, ঘর, বাড়ি, রাস্তাঘাট, উদ্ভিদ, প্রাণী, পানি, মাটি ও বায়ু নিয়ে গড়ে ওঠে পরিবেশ। পরিবেশ বিজ্ঞানী আর্মসের মতে, জীবসম্প্রদায়ের পারিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে।
সি. সি পার্ক (C. C. Park) বলেছেন, পরিবেশ বলতে স্থান ও কালের কোন নির্ধিষ্ট বিন্দুতে মানুষকে ঘিরে থাকা সল অবস্থার যোগফলকে বোঝায়। স্থান ও কালের পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবেশও পরিবর্তিত হয়। যেমন-শুরুতে মাটি, পানি, বায়ু, উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে ছিল মানুষের পরিবেশ। পরবর্তীকালে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কার্যাবলি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন ধরনের পরিবেশ।
পরিবেশের উপাদান দুই প্রকার যেমন জড় উপাদান ওজীব উপাদান। যাদের জীবন আছে, যারা খাবার খায়, যাদের বৃদ্ধি আছে, জন্ম আছে, মৃত্যু আছে তাদের বলে জীব। গাছপাড়া, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হলো জীব। এরা পরিবেশের জীব উপাদান। জীবদের নিয়ে গড়া পরিবেশ হলো জীব পরিবেশ। মাটি, পানি, বায়ু, পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, আলো, উষ্ণতা, আর্দ্রতা হলো পরিবেশের জড় উপাদান। এই জড় উপাদান নিয়ে গড়া পরিবেশ হলো জড় পরিবেশ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবন, চিন্তা-ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবোধের পরিবর্তন ভূগোলের পরিধিকে অনেক বিস্তৃত করেছে। এখন নানান রকম যেমন ভূমিরুপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, প্রানিবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, রাজনীতি, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি ইত্যাদি ভূগোল বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
ভূগোলের শাখা দুই ভাগে বিভক্ত। যথা: একটি হচ্ছে প্রাকৃতিক ভূগোল অন্যটি হচ্ছে মানব ভূগোল। এই দুই ভূগোল আবার কয়েকভাবে বিভক্ত যা নিম্নে দেখানো হলো-
ভূগোল ও পরিবেশ দুটিই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি ছাড়া আরেকটি কল্পনা প্রায় অসম্ভব। ভূগোল হল পৃথিবীর বিজ্ঞান পৃথিবীপৃষ্টে সংঘটিত উপাদানগুলো কিভাবে কাজ করছে। এবং প্রাকৃতিক বিষয়গুলোর সাথে মানুষের কি সম্পর্ক মানুষ তা নিজেদের সাথে মানিয়ে চলছে তার ব্যাখ্যা বের হয়েছে। অন্যদিকে মানুষ সেখানে বসবাস করুক না কেন তাকে ঘিরে রয়েছে পারিপার্শ্বিক অবস্থা আমাদের পরিবেশ সেসব উপাদান দিয়ে গঠিত হয় তার যথোপযুক্ত ব্যাখ্যা এবং আলোচনা করার জন্য রয়েছে ভূগোল। সুতরাং ভূগোল এবং পরিবেশ একই সূত্রে গাঁথা।
ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট-২ দেখতেঃ সিন্ধু সভ্যতা আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ
ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট-১ দেখতেঃ মানব জীবনে ইতিহাস
View all
You must be logged in to post a comment.