রসায়ন সাজেশন এসএসসি ২০২৬

রসায়ন সাজেশন এসএসসি ২০২৬: সেরা প্রস্তুতির চূড়ান্ত গাইড 🧪

২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা, তোমরা যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছো, তাদের জন্য রসায়ন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মজার বিষয়। এটি আমাদের চারপাশের বিভিন্ন পদার্থ, তাদের ধর্ম ও পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) কর্তৃক প্রকাশিত পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুসারে, রসায়নে ভালো ফলাফল অর্জন করতে হলে সিলেবাসের প্রতিটি অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তুর উপর গভীর মনোযোগ দেওয়া আবশ্যক। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব রসায়ন সাজেশন এসএসসি ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য রসায়ন বিষয়ের একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু কার্যকর সাজেশন এবং প্রতিটি অধ্যায়ের প্রস্তুতির কৌশল নিয়ে আলোচনা করব, যা তোমাদের পরীক্ষায় ভালো করতে সাহায্য করবে।

রসায়ন বইটি ডাউনলোড করতে এই লিংকে ক্লিক করুন: https://drive.egovcloud.gov.bd/index.php/s/DpYaJJtPN7FaRC7

রসায়ন বইটির গাইড ডাউনলোড করতে এই লিংকে ক্লিক করুন:

https://rsacademybd.com/20ssc-2026-guide-pdf/


ক) পদার্থের গঠন ও পর্যায় সারণি: রসায়নের ভিত্তি

এই অংশটি রসায়নের সবচেয়ে মৌলিক ধারণাগুলো নিয়ে কাজ করে, যা ছাড়া রসায়ন বোঝা কঠিন।

  • অধ্যায়-৩: পদার্থের গঠন:
    • মূল বিষয়: এই অধ্যায়ে তোমরা পরমাণুর গঠন, ইলেকট্রন বিন্যাস (বোরের মডেল ও কোয়ান্টাম সংখ্যা), আইসোটোপ ও তাদের ব্যবহার, এবং পরমাণুর কণা (ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন) সম্পর্কে জানবে।
    • সাজেশন: ইলেকট্রন বিন্যাসের নিয়ম, আইসোটোপের সংজ্ঞা ও ব্যবহার (যেমন: ডায়াগনস্টিক ও কৃষি ক্ষেত্রে) এবং পরমাণু, অণু ও যৌগের মধ্যে পার্থক্য ভালোভাবে পড়বে।
  • অধ্যায়-৪: পর্যায় সারণি:
    • মূল বিষয়: আধুনিক পর্যায় সারণির গঠন, পর্যায় ও গ্রুপের বৈশিষ্ট্য, মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে পর্যায় ও গ্রুপ নির্ণয়, এবং পর্যায়বৃত্ত ধর্মাবলি (যেমন: ধাতব ধর্ম, অধাতব ধর্ম, আয়নীকরণ শক্তি, ইলেকট্রন আসক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা) নিয়ে আলোচনা।
    • সাজেশন: পর্যায় সারণির বৈশিষ্ট্যগুলো মুখস্থ করবে। ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে মৌলের পর্যায় ও গ্রুপ নির্ণয়ের পদ্ধতি খুব ভালোভাবে অনুশীলন করবে। পর্যায়বৃত্ত ধর্মগুলোর সংজ্ঞা ও পর্যায় সারণিতে তাদের পরিবর্তনের প্রবণতা বুঝবে।

খ) রাসায়নিক বন্ধন ও গণনা: অণুর সৃষ্টি ও বিক্রিয়ার হিসাব

এই অংশটি অণু কীভাবে গঠিত হয় এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পদার্থের পরিমাণগত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।

  • অধ্যায়-৫: রাসায়নিক বন্ধন:
    • মূল বিষয়: যোজনী, যোজ্যতা ইলেকট্রন, আয়নিক বন্ধন ও সমযোজী বন্ধন গঠন, তাদের বৈশিষ্ট্য, এবং ধাতব বন্ধন নিয়ে আলোচনা।
    • সাজেশন: আয়নিক ও সমযোজী বন্ধন গঠনের প্রক্রিয়া (ইলেকট্রন আদান-প্রদান ও শেয়ারের মাধ্যমে) উদাহরণসহ শিখবে। যৌগগুলোর ধর্ম (যেমন: গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, বিদ্যুৎ পরিবাহিতা) বন্ধনের প্রকৃতির উপর কীভাবে নির্ভর করে, তা বুঝবে।
  • অধ্যায়-৬: মূলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা:
    • মূল বিষয়: মোল কী, মোলার আয়তন, আণবিক ভর, স্থূল সংকেত ও আণবিক সংকেত নির্ণয়, শতকরা সংযুতি এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার স্টোইচিওমেট্রি (বিক্রিয়ক ও উৎপাদের পরিমাণগত হিসাব)।
    • সাজেশন: মোলের ধারণা পরিষ্কার রাখবে। স্থূল সংকেত ও আণবিক সংকেত নির্ণয়ের অঙ্কগুলো অনুশীলন করবে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমীকরণ থেকে উৎপাদের পরিমাণ নির্ণয় এবং শতকরা সংযুতি নির্ণয়ের সমস্যাগুলো বেশি বেশি চর্চা করবে।

গ) অ্যাসিড, ক্ষার ও লবণ: দৈনন্দিন জীবনে রসায়ন

এই অংশটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করে।

  • অধ্যায়-৭: এসিড, ক্ষার ও লবণ:
    • মূল বিষয়: অ্যাসিড, ক্ষার ও লবণের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার, নির্দেশক এবং pH স্কেলের ধারণা। অ্যাসিড-ক্ষার বিক্রিয়া এবং আমাদের জীবনে এদের গুরুত্ব।
    • সাজেশন: অ্যাসিড, ক্ষার ও লবণের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ মনে রাখবে। pH স্কেল কী এবং এর গুরুত্ব বুঝবে। প্রশমন বিক্রিয়া এবং দৈনন্দিন জীবনে অ্যাসিড-ক্ষারের প্রভাব সম্পর্কে পড়বে।

ঘ) খনিজ সম্পদ: প্রাকৃতিক উৎস ও ব্যবহার

  • অধ্যায়-১১: খনিজ সম্পদ: জীবাশ্ম:
    • মূল বিষয়: খনিজ সম্পদ, জীবাশ্ম জ্বালানি (যেমন: কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম), এদের গঠন, ব্যবহার, এবং পরিবেশগত প্রভাব। পেট্রোলিয়াম থেকে বিভিন্ন উপাদানের পৃথকীকরণ (আংশিক পাতন) ও এদের ব্যবহার।
    • সাজেশন: জীবাশ্ম জ্বালানির সংজ্ঞা, প্রকারভেদ এবং তাদের ব্যবহার ভালোভাবে পড়বে। আংশিক পাতন প্রক্রিয়া এবং পেট্রোলিয়ামের উপজাতগুলোর ব্যবহার মনে রাখবে। পরিবেশের উপর জীবাশ্ম জ্বালানির প্রভাব সম্পর্কে ধারণা রাখবে।

পরিশেষে কিছু কথা:

২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য রসায়ন একটি স্কোরিং বিষয়। এই বিষয়ে ভালো করতে হলে প্রতিটি অধ্যায়ের মৌলিক ধারণাগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে, সূত্র ও সংজ্ঞাগুলো মুখস্থ রাখতে হবে এবং গাণিতিক সমস্যা সমাধানে দক্ষ হতে হবে।

রসায়নে ভালো করার জন্য কিছু সাধারণ কৌশল নিচে দেওয়া হলো:

  1. প্রতিটি অধ্যায়ের মূল ধারণা: প্রতিটি অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তুগুলো ভালোভাবে বুঝে পড়ো। যেমন, পদার্থের গঠনের ক্ষেত্রে পরমাণুর কণাগুলো, ইলেকট্রন বিন্যাস; পর্যায় সারণির ক্ষেত্রে মৌলের অবস্থান নির্ণয়; রাসায়নিক বন্ধনে বন্ধন সৃষ্টির প্রক্রিয়া ইত্যাদি।
  2. সংজ্ঞা ও সূত্র: রসায়নের বিভিন্ন সংজ্ঞা (যেমন: আইসোটোপ, মোল, pH), সূত্র এবং বিক্রিয়াগুলো মুখস্থ রাখবে।
  3. গাণিতিক সমস্যা: মোল, শতকরা সংযুতি, স্টোইচিওমেট্রি সম্পর্কিত গাণিতিক সমস্যাগুলো বেশি বেশি অনুশীলন করবে।
  4. বিক্রিয়া ও সমীকরণ: বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো (যেমন: অ্যাসিড-ক্ষার বিক্রিয়া, প্রশমন বিক্রিয়া) বুঝে পড়বে এবং সমীকরণগুলো লেখার অনুশীলন করবে।
  5. চিত্র ও ছক: পর্যায় সারণি, বন্ধন গঠন বা আংশিক পাতনের মতো বিষয়গুলোতে চিত্র ও ছক ব্যবহার করে ধারণা পরিষ্কার রাখবে।
  6. দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ: যে অধ্যায়গুলো তোমার কঠিন লাগে, সেগুলোর উপর বেশি সময় দাও। শিক্ষক বা অভিজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে তোমার দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করো।
  7. বিগত বছরের প্রশ্নপত্র: বিগত বছরের এসএসসি পরীক্ষার রসায়ন প্রশ্নপত্র সমাধান করলে প্রশ্নের ধরন এবং গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সম্পর্কে ধারণা পাবে।
  8. মডেল টেস্ট: পরীক্ষার আগে বেশি বেশি মডেল টেস্ট দাও। এতে সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়বে এবং পরীক্ষার ভীতি দূর হবে।

রসায়ন ভয়ের বিষয় নয়, এটি গবেষণার বিষয়। নিয়মিত এবং কৌশলগত অনুশীলন তোমাকে অবশ্যই তোমার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে সাহায্য করবে।

তোমার প্রস্তুতির জন্য অনেক শুভকামনা! ✨

রসায়ন সাজেশন এসএসসি ২০২৬ – RS Academy BD