বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় শর্ট সিলেবাস ২০২৬ New

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় শর্ট সিলেবাস ২০২৬: একটি সহায়ক নির্দেশিকা

২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় শর্ট সিলেবাস ২০২৬” একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য শিক্ষাবোর্ড এই বিষয়ের একটি পুনর্বিন্যাসকৃত ও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করেছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা সেই সিলেবাসের মূল বিষয়বস্তু, অধ্যায়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ টপিক এবং প্রস্তুতির কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই নির্দেশিকাটি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাকে আরও সহজ এবং কার্যকরী করে তুলবে।

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় শর্ট সিলেবাস ২০২৬: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সিলেবাসের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা

২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের বিষয় কোড হলো ১৫০ । এই বিষয়ের মোট নম্বর ১০০, যার পুরোটাই তত্ত্বীয় (লিখিত) পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ । ব্যবহারিক অংশে কোনো নম্বর নেই । সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় শর্ট সিলেবাস ২০২৬ দ্বিতীয় অধ্যায়: বাংলাদেশের স্বাধীনতা

এই অধ্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । শিক্ষার্থীরা ৭ই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারবে । এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ, পেশাজীবী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নারী, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের ভূমিকা সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা পাবে । এই অধ্যায়ের মূল লক্ষ্য হলো স্বাধীনতা যুদ্ধের ঐতিহাসিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করা

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় শর্ট সিলেবাস ২০২৬ তৃতীয় অধ্যায়: সৌরজগৎ ও ভূমন্ডল

এই অধ্যায়ে সৌরজগৎ, এর গ্রহগুলো এবং পৃথিবীতে জীবের বসবাসের কারণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । শিক্ষার্থীরা ভূ-অভ্যন্তরের গঠন, অক্ষ, অক্ষরেখা, দ্রাঘিমা রেখা, নিরক্ষরেখা ও আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা সম্পর্কে ধারণা পাবে । এছাড়া, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের সময় নির্ণয়ের পদ্ধতি, পৃথিবীর গতি (আহ্নিক ও বার্ষিক), দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি, ঋতু পরিবর্তন এবং জোয়ার-ভাটার কারণ ও প্রভাব নিয়েও পড়াশোনা করতে হবে । এই অধ্যায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গাণিতিক জ্ঞান প্রয়োগ করে সময় নির্ণয় করাও শিখতে পারবে

ষষ্ঠ অধ্যায়: রাষ্ট্র, নাগরিকতা ও আইন

এই অধ্যায়ে রাষ্ট্র, নাগরিক, আইন এবং সুশাসন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের ধারণা, এর উপাদান ও কার্যাবলি সম্পর্কে জানতে পারবে । বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য কী, তা এই অধ্যায়ে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে । এছাড়াও, আইনের ধারণা, এর উৎস এবং সুশাসনের জন্য আইনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যাবে

দশম অধ্যায়: জাতীয় সম্পদ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা

এই অধ্যায়ে জাতীয় সম্পদের ধারণা, এর শ্রেণিবিভাগ, উৎস এবং সংরক্ষণ ও অপচয় রোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, যেমন – ধনতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, মিশ্র ও ইসলামি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে । পাশাপাশি, বাংলাদেশের প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য এবং জাতীয় আয়ের বন্টন পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । এই অধ্যায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সম্পদ সংরক্ষণে সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ হবে

একাদশ অধ্যায়: অর্থনৈতিক নির্দেশকসমূহ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রকৃতি

এই অধ্যায়ে মোট জাতীয় উৎপাদন (জিএনপি), মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), এবং মাথাপিছু আয়ের ধারণা ব্যাখ্যা করা হয়েছে । জিএনপি ও জিডিপির মধ্যে পার্থক্য, জাতীয় অর্থনীতির খাতসমূহের অবদান এবং কয়েকটি দেশের জনসংখ্যা ও মাথাপিছু আয়ের তুলনা করার বিষয়ও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য, অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত অর্থনীতির ধারণাও জানতে পারবে

ত্রয়োদশ অধ্যায়: বাংলাদেশের পরিবার কাঠামো ও সামাজিকীকরণ

এই অধ্যায়ে পরিবারের ধারণা, প্রকারভেদ এবং কার্যাবলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । বাংলাদেশের পরিবার ব্যবস্থার (গ্রাম ও শহর) ধরন, এর পরিবর্তনের কারণ এবং সৃষ্ট সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে । সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া, এর উপাদান এবং এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়েছে । বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের প্রতি পরিবারের ভূমিকা এবং গ্রামীণ ও শহুরে সমাজে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে

প্রস্তুতির জন্য কিছু সহায়ক টিপস

  • প্রতিটি অধ্যায় ভালোভাবে পড়ুন: সিলেবাসে উল্লিখিত প্রতিটি অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তুগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।
  • গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো নোট করুন: প্রতিটি অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ, সংজ্ঞা, কারণ ও ফলাফলগুলো আলাদা করে লিখে রাখুন।
  • অনুশীলন করুন: বিগত বছরের প্রশ্নপত্র এবং মডেল টেস্ট সমাধান করে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করুন।
  • নিয়মিত রিভিশন দিন: পরীক্ষার আগে পুরো সিলেবাসটি একাধিকবার রিভিশন দিন।

এই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসটি পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। আশা করি, এই নির্দেশিকাটি অনুসরণ করে তোমরা সবাই পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারবে।